চকরিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিভাগের কর্মকর্তা চৌধুরী মোর্শেদ আলম টানা ১২ বছর ধরে একই স্টেশনে চাকরি করার সুবাদে তিনি জড়িয়ে পড়েছেন নানা অনিয়মে। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তার অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে অধীনস্থ ৭৭ জন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ও পরিদর্শিকার নতুন বেতন স্কেলের সিলেকশন গ্রেড, টাইম স্কেল, প্রাপ্য টাকা থেকে এবং নানাখাতে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে প্রায় ২৬ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এসব কাজে তাকে সহায়তা দিচ্ছেন অফিসের একটি অসাধু চক্র। এতে রয়েছেন অধিনস্থ কর্মকর্তা ইজ্জত আনোয়ার রুমেল, আবদুল মজিদ, সফিউল আলম, মো.জিশান সুলতান ও বাপ্পী শর্মাসহ অনেকে। এনিয়ে ভুক্তভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
তবে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন দাবি করে চকরিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চৌধুরী মোর্শেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘জেলা সদর অফিসের কর্মকর্তা নাজমুল হাসান চকরিয়ায় আসার জন্য কৌশলে আমার অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে ভুয়া অভিযোগ করে আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। আর এর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন চকরিয়া অফিসের অধীন কয়েকজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা। মুলত ইতিপূর্বে দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে অন্য সহকর্মীদের নিয়ে বানোয়াট অভিযোগ করে চলেছেন বিভিন্ন দপ্তরে।
অভিযোগে জানা গেছে, চৌধুরী মোর্শেদ আলম দীর্ঘ ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরির সুবাদে তিনি ঘুষ, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও নানা অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করলে তার উপর নেমে আসে দাপ্তরিক নানা হয়রানি। সম্প্রতি সময়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন জাতীয় বেতন স্কেলের আওতায় সিলেকশন গ্রেড, টাইম স্কেল ও প্রাপ্য টাকা থেকে চৌধুরী মোর্শেদ আলম অবৈতনিকভাবে ৬ লক্ষ টাকা কেটে রেখে দেন।
উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে কর্মরত পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা তছলিমা খানম জানান, তার কাছ থেকে বিল প্রদানের সময় ১৪শত টাকা এবং ‘আয়া’ পদের দুইজন ফাঁসিয়াখালীর ইছমত ছরওয়ার খানমের কাছ থেকে ২৯ হাজার টাকা ও সাহারবিলের ভানু প্রভা দাশের কাছ থেকে ২৭ হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন। এমন কোন আর্থিক খাত নেই যেখান থেকে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা টাকা আত্মসাত করেননি। ভুুক্তভোগীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একইস্থানে চাকরি করার সুবাদে তিনি কোন কিছুইকে তোয়াক্কা করছেন না।
চকরিয়া উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী নেত্রী শাহেনা বেগম বলেন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত করলেই সবকিছু বেরিয়ে আসবে। তবে আগে তাকে চকরিয়া থেকে বদলি করতে হবে।
এদিকে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী নেত্রী শাহেনা বেগমের স্বামী ও চকরিয়া উপজেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম সাংবাদিকদের জানান, তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমিটির মাসিক সভায়ও এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। কিন্তু তারপরও ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
পাঠকের মতামত: